
“সালাফগনের ইবাদাত
▪ আবু মুসলিম খওলানি (রহঃ):
অনেক বড় আল্লাহ ওয়ালা আবেদ ছিলেন।
একদিন দুইজন ব্যক্তি উনাকে খুজতে খুজতে মসজিদে গিয়ে পান। অত:পর উনারা দেখেন স্বলাতে আবু মুসলিম একেবারে বিভোর। উনারা নিজেদের মাঝে বলাবলি করছিলেন যে তিনি একটানা ৩০০/ ৪০০ রাকাত স্বলাতে মশগুল হয়ে ছিলেন, অথচ কে বা কারা উনাকে লক্ষ্য করছেন এইসব নিয়ে উনার কোন খেয়াল ই ছিলনা। সুবহান আল্লাহ ❣️
রোজা অবস্থায় তিনি জিহাদে গিয়েছিলেন। অথচ, জিহাদ বা সফরে রোজা রাখার কোন বাধ্যবাধকতা নেই ইসলামে। কিন্তু, তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের উদ্দেশ্যে ইবাদাতের কোন অংশে কমতি রাখতে চাননি।
▫ উনার দেয়া এক সুন্দর উপমাঃ
ঘোড়া যতক্ষন হাড্ডিসার না হয় ততক্ষণ সে চলতে থাকে, তেমন তিনি যতক্ষণ না আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন না করতে পারেন ততক্ষন তিনি তার আমল জারী রাখবেন
মসজিদে তিনি একটা চাবুক ঝুলিয়ে রাখতেন,যখন ই তার ইবাদাতে কোন অলসতা আসতো, তিনি নিজ গোড়ালিতে নিজেকে ১টি/ ২টি আঘাত করতেন। তিনি বলতেন, একটা পশু আমার চাইতে বেশি উপযুক্ত নয় এই চাবুকের জন্য !!
তিনি ছিলেন,মুস্তাজাবুত দুয়া। উনার দুয়া আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে কবুল করে নিতেন। উনার সময় কোন এক এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছিলনা অনেক দিন ধরে তখন তিনি দুয়া করলেন এবং আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করে নিলেন, দ্রুতই বৃষ্টিপাত শুরু হলো,সুবহানআল্লাহ ।
এক মহিলা তার অনিষ্ট করতে চান, ফলে তার চোখ অন্ধ হয়ে যায়।

▪ আহনাফ ইবনে কায়েসঃ
তিনি অত্যন্ত সবরওয়ালা আর সহনশীল ব্যক্তি ছিলেন।
অনেক বেশি আল্লাহ ভীরু ছিলেন। বৃদ্ধ অবস্থায় তিনি রোজা রাখতে পারবেন না,দুর্বলতা তাকে পেয়ে বসতে পারে..কেউ এমন কথা বলায় তিনি বলেন, *এই রোজার মাধ্যমে আমি এক দীর্ঘ সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি নফল ইবাদাত এ বিনিদ্র রজনী জাগ্রত থাকতেন।
তিনি নিজেকে বলতেন, “হে আহনাফ!আখেরাতে যদি তোমাকে আগুনে ফেলে দেয়া হয় তাহলে কি তুমি তার তেজ সহ্য করতে পারবে?
তিনি বলতেন,“হে আল্লাহ, আপনি যদি আমাকে ক্ষমা করতে চান সেই ক্ষমতার মালিক আপনিই। আর আপনি যদি আমাকে শাস্তি দিতে চান। সেই শাস্তি দেয়ার মালিক ও কেবল আপনিই। “
♻️ উনার ৩ টি গুনঃ
▫️আমাকে ডাকা ব্যতীত আমি কোন বাদশাহের দরবারে যাইনা।
▫️আমাকে না বলা পর্যন্ত দুই জনের মাঝে আমি যাইনা।
▫️যতক্ষন না ভাল কাজ সংঘটিত হচ্ছে ততক্ষন আমি তা কাউকে বলিনা।
▪ ইয়াহিয়া ইবনে সাইদ রাহিঃ
হাদিস শাস্ত্রে উনার অনেক ইলম ছিল। উনাকে আমীরুল মুমিনীন ফিল হাদিস বলা হতো।
জামাতের ক্ষেত্রে তিনি এতো বেশি গুরুত্ব দিতেন যে, জিবদ্দশায় তিনি কখনোই সালাত ত্যাগ করেননি। টানা ৪০ বছর ধরে উনার কোন স্বলাতে জামাত ছুটে যায়নি!!
▫ শিক্ষাঃ
রব এর জন্য কোন কাজে যখন কেউ চেষ্টা করে আল্লাহ তা তার জন্য সহজ করে দেন।
উনার উত্তম একটা গুন ছিল,কুরআন শুনে তিনি অঝোরে কাঁদতেন।
আনকাবুতঃ ৬৯
وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۶۹﴾
“আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন।” এই আয়াত শুনে তিনি কাঁদতে থাকলেন।
দুখানঃ ৪০ঃ
اِنَّ یَوۡمَ الۡفَصۡلِ مِیۡقَاتُهُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿ۙ۴۰﴾
“নিশ্চয় ফয়সালার দিনটি তাদের সকলের জন্যই নির্ধারিত সময়।”
এই আয়াত শুনে উঁচু স্থান থেকে পড়ে গিয়ে আঘাত প্রাপ্ত হন। উনার এই আঘাত এর দরুন যেই ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল তা ঠিক হওয়ার পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
একবার একজন বলেন,সুরা যিলযালের প্রথম আয়াত শুনে তিনি ভয়ে বেহুঁশ হয়ে যান। আমরা আমাদের অবস্থান টা নিয়ে চিন্তা করি, কুরআন নিয়ে আমাদের কোন অনুভুতি কাজ করেনা। কারন,আমরা কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর করার কোন চেষ্টা চালাই না
আল্লাহ আমাদের কে হেফাযত করুন।আমিন

▪ ঈমাম শাফি রাহিঃ
প্রতিটি স্বলাতে তিনি কুরআন সম্পন্ন করতেন।
স্বলাতে তিনি এতোটা বিনয়ী ছিলেন যে তার থেকে উত্তম স্বলাত আর দেখা যায়নি। উনার এই খুশুখুযু ওয়ালা স্বলাতের শিক্ষার মূল ছিল রাসুল সঃ এর পূর্ন অনুসরন ।
রাত কে তিনি ৩ ভাগে ভাগ করতেন।
একভাগ লেখালেখির জন্য, একভাগ সালাতের জন্য, একভাগ ঘুমের জন্য।
আমাদের সকল উশৃংখলতার আসল কারন হল সালাতে গাফিলতা। স্বলাতে আমরা বিনয়ী নই। আল্লাহুম্মাগফিরলী…
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কে আমাদের পুর্বসুরি সালাফদের জীবন থেকে উত্তম রুপে ইবাদত এর শিক্ষা নেয়ার তাওফিক দিন,আমিন।
( আমাদের তালিমুন নিসার তালিম স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর করা শর্ট নোট, আল্লাহ তাঁয়ালা বোনকে উত্তম প্রতিদান দিন )